Apan Desh | আপন দেশ

তাইজুলের ঘূর্ণি লিডের স্বপ্ন দেখাচ্ছে টাইগারদের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:০৩, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

আপডেট: ২১:১১, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

তাইজুলের ঘূর্ণি লিডের স্বপ্ন দেখাচ্ছে টাইগারদের

তাইজুল একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ সব উইকেট হারেয় সর্বসাকুল্যে তুলতে পেরেছিল ৩১০ রান। তবে মাঝারিমানের এই সংগ্রহ নিয়েই সিলেটে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে লিডের আশা করছে টাইগাররা। দ্বিতীয় দিন শেষে কিউইদের সংগ্রহ ৮ উকেটে ২৬৬ রান।এক কেন উইলিয়ামসন ছাড়া কিউই কোনো ব্যাটারই সেভাবে দাঁড়াতে পরেননি তাইজুল-মিরাজদের সামনে।

আর দ্বিতীয় দিনের শেষভাগে এসে সেঞ্চুরি হাঁকানো উইলিয়ামসনকেও ফিরিয়েছেন তাইজুল। ফলে খেলার রাশ এখন সামান্য হলেও টাইগারদের হাতে। প্রথম দিনের মতোই দ্বিতীয় দিনও আলোকস্বল্পতায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খেলা বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে দিনের প্রথম বলেই বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন আগের দিন ১৩ রানে অপরাজিত থাকা শরিফুল। এরপর ব্যাট করতে নেমে আজ মোট ৮৪ ওভার খেলতে পেরেছে নিউজিল্যান্ড। এ সময় ৮ উইকেটে হারিয়ে তুলতে পেরেছে ২৬৬ রান। ফলে বাংলাদেশ থেকে এখনও ৪৪ রানে পিছিয়ে আছে তারা। কাইল জেমিসন ৭ আর টিম সাউদি ১ রানে অপরাজিত আছেন। এদিন টাইগারদের হয়ে স্পিনার তাইজুল একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট।

টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৯ উইকেটে ৩১০ রান। আজ আর তার সঙ্গে কোনো রান যোগ করতে পারেননি শরিফুল-তাইজুল। দিনের প্রথম বলেই বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায়।

এরপর নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৪৪ রানের মাথায় ২ উইকেট হারায় কিউইরা। সেখান থেকে দরকে ম্যাচে ফেরান অভিজ্ঞ কেন উইলিয়ামসন। জুটি গড়েন হেনরি নিকোলস, ড্যারেল মিচেল ও টস ব্লান্ডেলের সঙ্গে।

ওপেনার ডেভন কনওয়েকে আউট করে টাইগারদের উল্লাস

একে একে তাদের ফেরান তাইজুল-মিরাজ-শরিফুল-নাইমরা। তবে একপ্রান্ত ঠিকই আগলে রাখেন উইলিয়ামসন। এই ডানহাতি ব্যাটারের সঙ্গে জুটি গড়া নিকোলস ১৯ রান করে পেসার শরিফুলের শিকার হন। মিচেল আউট হন তাউজুলের ঘূর্ণিতে (৫৪ বলে ৪১)। নাইম হাসানের বলে আউট হওয়ার আগে ব্লান্ডেল করেছেন ৬ রান।

এর আগে ইনিংস ওপেন করতে পারেন ডেভন কনওয়ে ও টম ল্যাথাম। তবে তাইজুল-মিরাজের ঘূর্ণিতে সেটি বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় ল্যাথাম ও ৪৪ রানের মাথায় আউট হন কনওয়ে। ল্যাথামকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তাকে সুইপ খেলতে গিয়ে ফাইন লেগ অঞ্চলে নাইম হাসানের হাতে ক্যাচ হন ল্যাথাম।

এরপর আরকে ওপেনার কনওয়েকে ফেরান অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। এই অলরাউন্ডারের বলে খেই হারিয়ে শর্টলেগে শাহাদাত হোসেনের তালুবন্দি হন কনওয়ে।

মধ্যাহ্নভোজের পর আউট হন নিকোলস। শরিফুলের বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। তার আগে ৪২ বলে করেন ১৯ রান। উইলিয়ামসনের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি ছিল তার।

তবে একে এক সঙ্গীদের বিদায়ের মাঝেও একটা প্রান্ত ধরে ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। গড়েন একের পর এক জুটি। নিকোলসের সঙ্গে ৫৪, মিচেলের সঙ্গে ৬৬ রানের পর গ্লেন ফিলিপসের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটেও ৭৬ রান যোগ করেন তিনি। এ সময় বেশ চিন্তায় পড়ে যায় টাইগাররা। কিছুতেই জুটিটা ভাঙা সম্ভব হচ্ছিল না।

টেস্টে ২৯ তম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন উইলিয়ামসন

অবশেষে ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মুমিনুল হকের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আর বল হাতে নিয়েই উইকেটের দেখা পান সাবেক এ টাইগার অধিনায়ক। তার টার্ন করা বল ফিলিপসের (৪২) ব্যাটে লেগে প্রথম স্লিপে গেলে নিচু ক্যাচ দারুণভাবে লুফে নেন শান্ত।

কিন্তু বুক চিতিয়ে লড়ে যাচ্ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। একটা প্রান্ত ধরে জুটির পর জুটি গড়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম সেঞ্চুরিও তুলে নেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।

অবশেষে দিনের শেষ ভাগে এসে তাকে সাজঘরে পাঠাতে সক্ষম হন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট নামিয়েও বোল্ড হয়ে যান উইলিয়ামসন। এদিন ২০৫ বল মোকাবিলা করে ১০৪ রানের ধৈর্যশীল ইনিংসে খেলার পথে ১১টি বাউন্ডারি হাঁকান এ কিউই তারকা।

প্রথমদিন মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৮৫ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১০ রান করে বাংলাদেশ। এরপর আজ আর এক বল মোকাবিলা করে কোনো রান না করেই অলআউট হয় তারা।

বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। তবে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করার আগেই হন ইশ সোধির শিকার। ১৬৬ বলে ১১ বাউন্ডারি হাঁকানো এই ব্যাটার সোধির বলে ড্যারেল মিচেলের ক্যাচ হন।

এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক করেন সমান ৩৭ রান। ফিলিপসের ফুলটস বলে মিড-অনে উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সেট হওয়া শান্ত। ফিলিপসের দ্বিতীয় শিকার হন মুমিনুল। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ক্যাচ হন উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে।

এরপরই মূলত বিপত্তি ঘটে বাংলাদেশের। ৫৩ রানে হারায় ৫ উইকেট। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১০ রানে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনে রানটা আর বাড়াতে পারেনি।

কিউই পার্টটাইম অফস্পিনার গ্লেন ফিলিপস একাই নেন ৪টি উইকেট। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন কাইল জেমিসন আর অ্যাজাজ

প্যাটেল। বাকি দুই উইকেট ভাগািভাগি করেছেন অধিনায়ক সাউদি ও ইশ সোধি।

আপন দেশ/এমএমজেড

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়