Apan Desh | আপন দেশ

কিউইদের কাছে ৮৬ রানে হার, সিরিজ বাঁচানোর শঙ্কায় টাইগাররা

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৩৫, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আপডেট: ০৯:১৪, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কিউইদের কাছে ৮৬ রানে হার, সিরিজ বাঁচানোর শঙ্কায় টাইগাররা

বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ

ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রস্তুতি হিসেবে আজ (২৩ সেপ্টেম্বর) ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পণ্ড হয়ে যাওয়ায় তিনি ম্যাচ সিরিজের আজকের খেলায় যারাই জয়লাভ করবে তাদের অন্তত সিরিজ হারার সম্ভাবনা থাকবে না। এমন সমীকরণের ম্যচে কিউইদের কাছে ৮৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। এই জয়ে সিরিজ জয়েরও স্বপ্ন দেখছে নিউজিল্যান্ড। এদিন দুই সিনিয়র তামিম ইকবাল এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছাড়া আর কেউ দাঁড়াতেই পারেনি নিউজিল্যান্ড বোলারদের সামনে।

এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক লকি ফার্গুসন। তবে তার সেই সিদ্ধান্তই সঠিক প্রমাণ হয়েছে। যদিও শুরুর দিকের ব্যাটাররা সুবিধা করতে পারেননি। মাত্র ৩৬ রানের মধ্যে প্রথম সারির তিন ব্যটসম্যানকে হারায় তারা।

এমন কঠিন অবস্থায় টম ব্লান্ডেলকে নিয়ে ইনিংস মেরামতে মনযোগী হন হেনরি নিকোলস। এই দুজনে মিলে দলকে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়ে যান। ১১১ বলে ৯৫ রানের জুটি গড়েন তারা। এই জুটি যখন ভাঙে তখন দলীয় রান ছিল ১৩১। পরের ব্যাটসম্যানরাও মোটামুটি রান করলে ৪৯.২০ ওভারে অল আউট হওয়ার আগে ২৫৪ রানের মোটামুটি চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে সক্ষম হয় নিউজিল্যান্ড।  ফলে বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাাঁয় ২৫৫ রান।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই প্রায় আউট হয়ে গিয়েছিলেন এই সিরিজে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া লিটন দাস। ট্রেন্ট বোল্টের বল প্রথম মোকাবিলা করতে গিয়েই পরাস্ত হন তিনি। হালকা আবেদন করেন কিউইরা। সে আবেদনে কিছুটা সময় নিয়ে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার মরিস ইরাসমাস। লিটন রিভিউ নিলেন। হক আই ভিউতে দেখা গেলো, বল স্ট্যাম্প মিস করতো। উপর দিয়ে চলে যেতো উইকেটরক্ষকের হাতে। তাই এ যাত্রায় বেঁচে যান তিনি।

এরপর দলীয় ৬ষ্ঠ ওভারের শেষ বলে উইকেট দেন তিনি। দলীয় রান তখন ছিল ১৯। কাইল জেমিসনের বলে রাচিন রবিন্দ্রর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যাওয়ার আগে করেন ১৬ বলে মাত্র ৬ রান।

এরপর ১২ বলে ১৬ রান করে আউট হন তানজিদ হাসান তামিম। এশিয়া কাপের ব্যর্থতা কাটাতে পারেননি এ ম্যাচেও।  ফলে ১০.৪ ওভারে ৬০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

তার বিদায়ে ক্রিজে আসন দীর্ঘদিন ধরে রান খরায় ভুগতে থাকা সৌম্য সরকার। বারবার ব্যর্থ হয়েও সুযোগ পাওয়া এ ব্যাটসম্যান আজ ফিরে গেছেন শূন্য রানে। ইশ সোধির হাতে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তার আগে মাত্র দুই বল মোকাবিলা করতে পেরেছিলেন।

এরপর তাওহিদ হৃদয়ও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৭ বল খেলে ৪ রান করে ইশ সোধির বলে বোল্ড হন তিনি। ৭০ রানের মাথায় ৪ উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের।

যা একটু লড়াই করেছেন এই দুই সিনিয়র ব্যাটসম্যানই

দলের এমন অবস্থায় ক্রিজে আসেন দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ডাক পাওয়া অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এশিয়াকাপের আগে আচমকা অবসরের ঘোসণা দেয়া, পরে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ফিরে এলও অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়া তামিম ইকবালের সঙ্গে জুটি বাধেন তিনি। এই দুই সিনিয়র ক্রিকেটার মিলেও দলকে বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। তাদের জুটিটা হলো মাত্র ২২ রানের। দীর্ঘদিন পর হাফ সেঞ্চুরির থেকে ৬ রান দূরে থাকতে সোধির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন তামিম ইকবাল। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। যা ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

তামিমের বিদায়ের পর মাহদি হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ৪২ রান তোলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৯ বলে ১৭ রান করে আউট হন মাহদি হাসানও। দলীয় লান তখন ১৩৪। এরপর আর কেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মাহমুদুল্লাহও। হাফ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র এক রান দূরে থাকতে ম্যাক কোঞ্চির বলে অ্যালেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি (৪৯ রান)। এই রান করতে তিনি খেলেন ৭৬ বল। এ সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ১৪৯ রান। মূলত তার বিদায়েই বাংলাদেশের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়।

এরপর চার রান যোগ হতেই হাসান মাহমুদ ৪ বল খেলে শূন্য রানে বিদায় নিলে ৮ম উইকেট হারায় বাংলাদেশ (১৫৩/৮)।

এ অবস্থায় আটে নামা নাসুম আহমেদ কিছুটা দৃঢ়তা দেখালেও তা বাংলাদেশের হার এড়াতে যথেষ্ট ছিল না। শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই একটু কমাতে পেরেছে মাত্র। ৪০.২ ওভারে তিনি যখন আইট হন তখন বাংলাদেশের রান ছিল ১৬৭। জেমিসনের বলে বোল্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ৩০ বলে ২১ রান করেন এ টেল এন্ডার। নবম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর আর ১ রান যোগ হতেই বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়ে যায়। ১০ম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফার্গুসনের বলে ১ রান করে আউট হন খালেদ আহমেদ। বাংলাদেশ হারে ৮৬ রানের বড় ব্যবধানে।

এদিন কিউই স্পিনার ইশ সোধি ৩৯ রানে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের প্রথম স্পিনার হিসেবে ওয়ানডেতে ৬ উইকেট পেলেন তিনি। তার আগে সেরা রেকর্ড ছিল ড্যানিয়েল ভেট্টোরির। ২০০৭ সালে কুইন্সটাউনে বাংলাদেশের বিপক্ষেই ৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

এশিয়ার মাটিতে এশিয়ার বাইরের কোনো স্পিনারের ওয়ানডে সেরা বোলিংও এখন  ইশ সোধির দখলে। আগের সেরা আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিংয়ের, ২০১৭ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬/৫৫।

আপন দেশ/এমএমজেড

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়