Apan Desh | আপন দেশ

লন্ডনে হাওয়া ভবনের বকুল, বিএনপির সমাবেশে ‘প্রভাব’

বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:২৩, ২৯ জুন ২০২৪

আপডেট: ১৮:২৫, ৩০ জুন ২০২৪

লন্ডনে হাওয়া ভবনের বকুল, বিএনপির সমাবেশে ‘প্রভাব’

ফাইল ছবি

ঘুরে দাঁড়ানোর সমাবেশ করছে বিএনপি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালের বিছানায় রেখে সমাবেশ করছে দলটি। ইতোমধ্যে দলটির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনের শুরু হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সমাবেশস্থলে যে সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তার আংশিকও পুরণ হয়নি। 

বিশ্লেষকদের মতে, দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। যে ইস্যুর সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের আবেগ জড়িত। কিন্তু দলটির আজকের সমাবেশ ‘ফ্লপ‘ করেছে। দিনশেষে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের। আজকের সমাবেশে নেতাকর্মী কেন কম- এমন প্রশ্ন সাধারণ নেতাকর্মীদের মুখে মুখে।

আরও পড়ুন>> বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সারে ‘কুপোকাত’ ব্যারিস্টার খোকন!

দীর্ঘ আট মাস পর বিএনপির এ কর্মসূচি সফল হবার কথা ছিল। সে লক্ষ্যে নানামুখি প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছিল। তবে সমাবেশ সফল বা ফ্লপ করার নেপথ্যে কাজ করছিল দলের আসন্ন তিনটি কমিটি। জাতীয়তাবাদী যুবদল, ঢাকার দুই মহানগর কমিটি। সমাবেশের আগে একাধিক কমিটির প্রস্তুতি সভায় বারবার বার্তা দেয়া হয়েছে যে, এ সমাবেশ একদিকে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির; অন্যদিকে নতুন নেতা বাছাই করার। নেতার পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করেই নতুন পদ দেয়া হতে পারে। এজন্য পদ প্রত্যাশীরা নিজ নিজ অঞ্চল থেকে ব্যাপকসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু গতকাল শুক্রবার রাতের একটি বার্তাই পদপ্রত্যাশীদের আশায় গুড়েবালি। যার প্রভাব পড়েছে আজকের সমাবেশ। 

যে বার্তায় সমাবেশে নেতিবাচক প্রভাব

গত ২৮ অক্টোবরের পর বিএনপি আন্দোলন করে আসছিল। এরই মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। দলটির আন্দোলনে নেতাদের ভূমিকা, সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে একটি মূল্যায়ন কমিটি করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার আলোকেই বিভিন্ন কমিটি ভাঙা-গড়ার কাজ চলছিল। ১৩ জুন যুবদলসহ ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ মহানগর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপরই কিছু নেতার প্রমোশন, আবার কিছু নেতাকে ডাম্পিং কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নীতিনির্ধারকরাই অন্ধকারে ছিলেন, আছেন এখনও। ওই সময় থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনা। হাইকমাণ্ড কাদের মতামতে বা সুপারিশে বর্তমান নেতার উন্নতি-অবনতি ঘটাচ্ছেন? 

চাউর আছে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজনদের প্রভাবেই এমনটি ঘটছে। এরমধ্যে ঘুরে ফিরে আসছে ভারতের মেঘালয়ে অবস্থানরত দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও তৎকালীন হাওয়া ভবনের প্রভাবশালী রফিকুল ইসলাম বকুল এবং স্পেশাল অ্যাসিসট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপার্সন্স ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটি সদস্য ব্যারিস্টার কায়সার কামালের নাম। তাদের ইঙ্গিতের ওপর নির্ভর করছে নেতাদের ভাগ্য। রাজপথে না থেকেও উচ্চ আসনে আবার শত শত মামলা-কারাভোগের পরও কারও ভাগ্যে মিলেছে ডিমোশন।

আরও পড়ন>> বিএনপির গঠনতন্ত্রই তারেককে কর্তৃত্ববাদী করে তোলেছে!

জানা গেছে, শুক্রবার (২৮ জুন) রাতে রফিকুল ইসলাম বকুল গেছেন লন্ডনে। বৈঠক হবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে। সেখান থেকেই নির্দেশনা আসবে নতুন নেতার নাম-পদবীর। যা প্রিন্ট করে প্রচার-প্রকাশ করা হবে নয়াপল্টনের কার্যালয় থেকে। তাতে স্বাক্ষর করবেন দলের দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ঢাকা উত্তরের দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন আমিনুল হককে, দক্ষিণে হাবীন উন নবী খান সোহেল এবং যুবদলের কাণ্ডারী মুন্নাকেই করা হচ্ছে। এ মিশন বকুলদের।  

বকুল সিন্ডিকেটের পাশাপাশি বিপরীত অংশের নেতারাও রাতেই লন্ডনের খবরটি জেনে যায়। পদ প্রত্যাশীদের একাংশ আন্দাজ করেতে পেরেছেন তাদের ভাগ্যে কী জুটছে। যে কারণে তারা রাতারাতি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, মেসেজ দিয়ে নেতাকর্মীদের স্টপ করেছেন, বন্ধ করেছেন অর্থ বিনিয়োগ। ফলে নয়াপল্টনে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি প্রত্যাশার আংশিক সমবেত হয়েছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, মহানগর ও যুবদলের কমিটিতে কার লোক আসছে, কোন সিন্ডিকেট কাজ করছে তা প্রায় সব স্তরের নেতারাই জেনে গেছেন। ফলে হতাশাগ্রস্তরা সমাবেশ সফলে ভূমিকা রাখেনি। কাঙ্খিত জনসমাগম না হওয়া প্রধান কারণ এটিই বলে নেতাদের ধারণা। 

আপন দেশ/এবি/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়