Apan Desh | আপন দেশ

রওশন এরশাদ এখন কী করবেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:০৭, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

রওশন এরশাদ এখন কী করবেন?

ফাইল ছবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ২৮৭ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। এ তালিকায় জায়গা হয়নি দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদসহ তার অনুসারীদের। বাদ পড়াদের মধ্যে চারজন সংসদ সদস্য রয়েছেন।

এরশাদপুত্র রাহগির আল মাহি সাদের আসনে প্রার্থী হয়েছেন খোদ জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এ অবস্থায় চলমান সমস্যার সমাধান না হলে নির্বাচন করবেন না বর্তমান সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন।

গত সোমবার জাতীয় পার্টি ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় নাম নেই বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, তার ছেলে রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ, সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও দলের সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, বর্তমান সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজি, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, বিরোধীদলীয় নেতার রাজনৈতিক সচিব ও সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন রাজুসহ আলোচিত বেশ কয়েকজন নেতা।

জানা গেছে, দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরই রওশনপন্থিরা জরুরি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসিহ জানিয়েছেন, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে যাবেন না রওশন। তার নামে মনোনয়ন ফরম রাখা হলেও দলীয় কার্যালয় থেকে তা এখনো সংগ্রহ করা হয়নি। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময়।

জাপার একাধিক কো-চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ সংকট সমাধানে তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার কিছু অগ্রগতিও হয়েছে। বুধবারের মধ্যে তা দৃশ্যমান হতে পারে। দুপক্ষ একমত হলেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

জাপা সূত্রে জানা গেছে, দলীয় কোন্দল নিরসনে জি এম কাদেরকে কয়েকটি শর্ত দিয়েছিলেন রওশন। এর মধ্যে এক নম্বরটি হলো— তাকে কেন্দ্র করে দলের কার্যক্রম পরিচালনা। এ ছাড়া সবার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং ১৩টি আসনে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে বলেছিলেন রওশন। কিন্তু জি এম কাদের তিনটির বেশি আসন দিতে রাজি হননি। রওশন এরশাদ এতে সম্মত না হওয়ায় আর সমঝোতা হয়নি। 

আরও পড়ুন <> দেশব্যাপী ২৪ ঘণ্টার অবরোধ চলছে, কাল হরতাল

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েও পাননি। এতে তিনি আরও হতাশ হয়ে পড়েন। এর পরই সোমবার রাতে তার অনুসারী নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন না। মূলত দলের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অনেকটা গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন রওশন।

সার্বিক বিষয়ে মঙ্গলবার বিকালে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের গুলশানের বাসায় জাপা নেতাদের একটি বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু উপস্থিত ছিলেন।

গোলাম মসিহ বলেন, ‘বেগম রওশন এরশাদ সোমবার বিকাল ৪টায় আমাকে বলেছিলেন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। সন্ধ্যায় দেখলাম জি এম কাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন। এমন বাস্তবতায় বিরোধী দলের নেতা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এককথায় নির্বাচন থেকে তাকে মাইনাস করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা, অর্থাৎ রওশন এরশাদ দলটিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য চেষ্টা করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, সবাই এক হয়ে নির্বাচন করবে। কিন্তু আমাদের দলের মনোনয়নের আবেদন ফরম পর্যন্ত দেয়া হয়নি। এবার জি এম কাদের নিজেই দলে ভাঙনের পথ করে দিলেন।’

জাপার কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘পরিবারের মধ্যে সংকট কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আমরা আশাবাদী, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়