ছবি : সংগৃহীত
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রাজধানীতে দমকা বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সোমবার (২৭ মে) ভোর থেকে এ অবস্থা শুরু হয়। অবশ্য রোববার (২৬ মে) রাত থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল।
ঢাকার একাধিক এলাকায় দেখা যায়, সকাল থেকে বৃষ্টি ঝরছে। এতে করে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। আর যাদের ঘর থেকে বের হওয়া ঝাড়া কোনো উপায় নেই তারা ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেককে রেইনকোট পরে ও ছাতা মাথায় হেঁটে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
সকাল ৭টায় উত্তরায় দেখা যায়, থেমে থেমে আসা দমকা বাতাসের সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। অনেককে ভিজে ভিজে অফিসে যেতে দেখা গেছে। বৃষ্টিতে বেগ পেতে হচ্ছে স্কুল-কলেজে যাওয়া শিক্ষার্থীদের।
সকাল সাড়ে ৬টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, থেমে থেমে আসা দমকা বাতাসের সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। এতে এখানকার কাঁচাবাজারের পাইকারি সবজি ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেগ পেতে হচ্ছে। অনেকেই সবজি কেনা-বেঁচা রেখে বিভিন্ন ভবনের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেককে ভিজে ভিজে কাজ করতে দেখা গেছে।
পল্টন এলাকায় রিকশাওয়ালা হায়দার আলী বলেন, রেমাল নাকি এসেছে। বৃষ্টিতো হবেই। আমাদের ঘর থেকে বের হওয়া ছাড়া উপায় নেই।
আরও পড়ুন <> ঘূর্ণিঝড় রেমাল সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে
বেসরকারি চাকরিজীবী রুহুল আমিন বলেন, চাকরির খাতিরে বৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়ার মাঝেও বের হতে হয়। রেমাল সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে শুনে ভালো লেগেছে। উপকূলীয় মানুষের তুলনায় অঅমাদের কষ্ট কিছুই না।
মোটরসাইকেলে করে মহাখালী থেকে কুড়িলে আসা মামুন হোসেন বলেন, বিশেষ কারণে আজ সকাল ৭টায় অফিসে থাকতে হচ্ছে। যে কারণে বৃষ্টি আর এমন দমকা বাতাসের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে বের হয়েছি।
সকাল ৭টায় রাজধানীর নতুনবাজারে দেখা গেল যাত্রীছাউনিতে চার-পাঁচজনের জটলা। তারা জানালেন, বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময়টায় এমনিতেই গণপরিবহন কম থাকে। তার ওপর এমন বৃষ্টি। উপায় নেই। ৮টার মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে।
ছাতা মাথায় পথচারীদের বেশিরভাগই পোশাকশ্রমিক। তারা জানালেন, শিফট ডিউটি। সময়মতো না পৌঁছালে বিপদে পড়বেন। বেতন কাটা পড়বে। তাই এমন বৈরী আবহাওয়াতেও বের হয়েছেন তারা।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান রোববার দিনে বলেছিলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ঢাকায় রোববার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হবে। সোমবার সারা দিন এ বৃষ্টি থাকবে এবং থেমে থেমে বৃষ্টি হবে।
আবহাওয়া ডটকমের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার ও মঙ্গলবার ঢাকা শহরের উপরে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। যেহেতু সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের (দুই দিন প্রায় ৩০০ মিলিমিটার) প্রবল শঙ্কা নির্দেশ করছে। ফলে ঢাকা শহরে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল রোববার রাতে উপকূলে আঘাত হেনেছে। রাত আটটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।