Apan Desh | আপন দেশ

মানুষ কেন বার বার প্রেমে পড়ে?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ১৯ মে ২০২৪

মানুষ কেন বার বার প্রেমে পড়ে?

ছবি: সংগৃহীত

‘ভালোবাসা’ এমন একটি শব্দ যা মানুষের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। এ শব্দ মানুষের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের আবেগ-অনুভূতিকে সব সময় নাড়া দেয়। মানুষের চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা অনেক গভীর।

কিন্তু মানুষের ভালোবাসা বৈচিত্র্যময়। এ ভালোবাসা কখনও কখনও সুখ নিয়ে আসে, কখনও কখনও এটি সবকিছুকে ছিন্ন-ভিন্ন করে দিতে পারে। মানুষের উত্থান-পতনকে জোরালোভাবে প্রভাবিত করে।

কখনো সেই ভালোবাসা দীর্ঘস্থায়ী, কখনো ক্ষণস্থায়ী। ভালোবাসার গভীরতা কেমন হবে ভালোবাসা, বিশ্বাস, বিশ্বাসের ওপর। কিন্তু প্রেমের সঙ্গে বিজ্ঞানের কী সম্পর্ক...

এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। ডেটা দেখায় যে, বিবাহিত বা অবিবাহিত হওয়া প্রেমে পড়ার জন্য খুব বেশি কিছু করে না। কিন্তু সমীক্ষা মোটামুটিভাবে বিবাহবহির্ভূত যৌনতাকে চারটি বিভাগে ভাগ করেছে। প্রথমটি প্রেম, দ্বিতীয়টি কেবল যৌনতা, তৃতীয়টি যৌনতার উদ্দেশ্যে প্রেম এবং চতুর্থটি একটি বিকল্প সঙ্গী খুঁজে পাওয়া।

গবেষণা বলছে, যারা বিবাহবহির্ভূত যৌনসম্পর্ক করেন, শেষ পর্যন্ত তারা বিষণ্নতায় ভোগেন এবং তা ধরে রাখতে পারেন না। এক্ষেত্রে তার সঙ্গী, যিনি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিলেন না, তার কাউন্সেলিংয়ে আরও সময় প্রয়োজন। কারণ তিনি প্রতি মুহূর্তে অনুভব করেন, তিনি ভয়ানকভাবে প্রতারিত হচ্ছেন। আবার যে সমস্ত পুরুষ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত হয় তাদের মাদক সেবনের সম্ভাবনা বেশি এবং বৈবাহিক অসন্তুষ্টির হার বেশি।

এ ধরনের দম্পতিরা যখন দম্পতিদের কাউন্সেলিংয়ে আসেন, তখন দেখা যায় যে তাদের অনেকেই হীনমন্যতা এবং অনৈতিক চিন্তার দ্বারা চালিত হয়। সময়মতো দম্পতিদের কাউন্সেলিং না করলে তিনজনের মধ্যে একজনের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।

কিন্তু আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত কাউন্সেলিং ও সাইকোথেরাপি যথাযথ চিকিৎসা হিসেবে বিবেচিত হয় না। গবেষণা পরামর্শ দেয় যে, বৈবাহিক কলহ যদি অবিশ্বস্ততা বা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে হয়, তবে এটি বৈবাহিক দুর্দশার কারণের ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে।

আরও পড়ুন>> মানুষের নাম মনে রাখার কিছু টিপস

মনে রাখবেন, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গোপন নয়। আর কেউ না জানলেও স্বামী/স্ত্রী তা টের পাবে। হয়তো কারও বেশি সময়ের পর বা কারও কম সময়ের পর। যখন ধরা পড়ার পর মিথ্যা কথা না বলে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা স্বীকার করা হয়, তখন একে অপরের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে নিজেকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা যায়। সেক্ষেত্রে ভালো ফলও পাওয়া যায়। দেখা গেছে যে, এটি দাম্পত্য কলহ কমায়। কিন্তু এ পরিবর্তনের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণরূপে নিজেকেই করতে হবে। কারণ আমরা আসলে নিজেকে ছাড়া কাউকে পরিবর্তন করতে পারি না।

তাই জীবনসঙ্গীর কাছে সব কিছু সততার সঙ্গে স্বীকার করাই ভালো। কারণ, শেষ পর্যন্ত একটা মিথ্যাকে ঢাকতে কত মিথ্যা বলা হয় তার কোনো হিসাব থাকে না। তবে একথা অবশ্যই স্বীকার্য মিথ্যা কোনো না কোনো সময়ে ধরা পড়ে যাবেই।

কাপল থেরাপি বা দাম্পত্য থেরাপির জন্য অনেক সময় প্রয়োজন। কারণ, কাপল থেরাপি তিন ধাপে কাজ করতে হয়। আচরণ, চিন্তাভাবনা এবং আবেগের স্থানকে একত্রিত করা সহজ নয়। ফলে কাপল থেরাপিতে সময় লাগে।

অনেকেই দুই-তিন সেশনের পর অস্থির হয়ে পড়েন। তারা মনে করেন যে, থেরাপিস্টের কাছে একটি জাদুর কাঠি রয়েছে যা সে নাড়া দিতে পারে এবং সহজেই যা চায় তা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে, থেরাপিস্ট দম্পতিদের সম্পর্কের জটিলতাগুলো দেখাবেন। প্রথমে কোন গিঁট খুলবেন তা নির্ভর করবে যারা আসবে তাদের ইচ্ছাশক্তির উপর। এ কারণে কাপল থেরাপির জন্য অনেক সময় প্রয়োজন। মাসের পর মাস, এমনকি বছর পার হতে পারে। ফলে দুদিনেই সেরে যাবে ভাবলে ভুল হবে।

রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, মানুষ ভুলে যায় বিয়ে একটি শিল্প, আমরা প্রতিদিন এটিকে নতুন করে তৈরি করতে চাই। দাম্পত্য সম্পর্কে ঢোকার আগে প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে নিবিড় গোপনীয়তা! বিয়ের রহস্য ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যায়। আর এর ফলে একে অপরের প্রতি অনাগ্রহের জন্ম হয়। একে অপরকে ভালোবাসতে ভুলে যান।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, একাকীত্বই অনেকের প্রেমে পড়ার কারণ। কারণ একজন মানুষ যখন একা থাকে, তখন সে তার জীবনের সেরাটা খোঁজে। ভালো সঙ্গী খুঁজতে প্রেমে পড়ে।

আপন দেশ/এসএমএ

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়