Apan Desh | আপন দেশ

মালয়েশিয়া রেমিট্যান্সে রিজার্ভের পালে হাওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:০৫, ৩ অক্টোবর ২০২৪

আপডেট: ১৯:৪১, ৩ অক্টোবর ২০২৪

মালয়েশিয়া রেমিট্যান্সে রিজার্ভের পালে হাওয়া

ফাইল ছবি

মালয়েশিয়ায় দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর জন্য উন্মুখ হয়ে আছে বাংলাদেশ। এ শ্রমিকরা স্বল্প খরচে মালয়েশিয়া যেতে পারলে সেখানকার শ্রমিক সংকট নিরসন হবে। তারা অর্থনীতিতে যেমন অবদান রাখতে পারবে, তেমনি বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাতে পারবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে মাত্র ২২ মাসে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ শ্রমিক মালশিয়ায় গিয়েছে। এ শ্রমিকরা গত ৩ বছরে প্রায় সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। 

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে মালয়েশিয়া সরকারের সমঝোতা স্মারক প্রস্তাবে রাজী হয়ে সীমিত এজন্সি দিয়ে কর্মী পাঠানো হয়। এতে বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এখন এসব দায়ভার নিতে হচ্ছে রিক্রুটিং এজেন্সিদের। বায়রা সদস্যদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। এর জন্য দায়ী বিগত সরকারের মন্ত্রী ও সচিব। তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন সাধারণ বায়রা সদস্যরা। 

জনশক্তি রফতানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে শ্রমিক পাঠানো গেলে উভয় দেশেই উপকৃত হবে। 

সংশ্লিস্টরা জানান, বিদ্যমান সমঝোতা স্মারকের আওতায় ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ২২ মাসে পৌনে ৫ লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় গমন করে। বিশাল এ অভিবাসন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণরূপে অনলাইন ও স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার পদ্ধতিতে হয়। ফলে কোন কর্মী মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রতারিত হয়নি। তারা যথাযথ নিয়মে নিয়োগকারী কোম্পানিতে কাজ পেয়েছেন। এসব শ্রমিকরা ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। যা রেমিটেন্স হিসেবে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছেন। ওই ২২ মাসে যাওয়া শ্রমিকরা ন্যূনতম ১৫শ’ রিঙ্গিত মূল বেতন ও ওভারটাইম করে মাসে বাংলা টাকা প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন। এ হিসেবে তারা মাসে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা এবং বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা দেশে পাঠাচ্ছেন। যদি আরো ৫০০ এজেন্সি এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারতো তাহলে কোন বিতর্কই থাকতোনা। তবে ১১০০ সহযোগি এজেন্সি এ প্রক্রিয়ায় পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক রবিউল ইসলাম জানান, মালয়েশিয়া যাওয়া শ্রমকিরা সেখানকার কাজের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কর্মীদের প্রায় সবাই ভালো আছেন। কর্মীদের চুক্তি মোতাবেক সকল প্রকার অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়া সরকার। ওই ২২ মাসে বড় সংখ্যক শ্রমিক মালয়েশিয়ায় কাজে যোগদানের পর বাংলাদেশে বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। 

বর্তমানে বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মালয়েশিয়া ৮ম থেকে ৪র্থ স্থানে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে শুধুমাত্র ২০২৪ সালের আগষ্ট মাসে মালয়েশিয়া হতে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৫১ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। 

জানা গেছে, ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালেরর ব্যবস্থাপনায় সম্পূর্ণ বিনা খরচে ৩৫৮ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। তাদের নিয়োগকারী কোম্পানি সকল অভিবাসন ব্যয় বহন করেছে। আমাদের এজেন্সিকেও ব্যাংকিং চ্যানেলে মালয়েশিয়া হতে রিক্রুটিং চার্জ পরিশোধ করেছে। মালয়েশিয়ায় গমনকারী পৌনে পাঁচ লাখ কর্মী তাদের পরিবার-পরিজন মিলে অন্তত ২৫ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হয়েছে।

বায়রার সাবেক সাধারণ সম্পদক আলী হায়দার চৌধুরী জানান, মালয়েশিয়া প্লান্টেশন ও কৃষি খাতে বিদেশি কর্মীর চাহিদা প্রচুর। মালয়েশিয়ান সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সেদেশের শ্রমিক চাহিদা পূরণে বাংলাদেশী কর্মীদের নেয়ার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, বর্তমান সরকার মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর বিষয় সবসময় আন্তরিক। আমরা ওই দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো।

আপন দেশ/কেএইচ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়