Apan Desh | আপন দেশ

ভয়ানক জালিয়াতি, সাবেক ডিসির বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশীট

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৩০, ৩ জুলাই ২০২৪

ভয়ানক জালিয়াতি, সাবেক ডিসির বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশীট

সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন -ফাইল ছবি

বাদীর স্বাক্ষর এবং নথি জালিয়াতি করে প্রধান আসামির নাম বাদ দিয়েছেন। এ অভিযোগে কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন ও সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারের বিরুদ্ধে। তিনিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (১ জুলাই) কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ মুনসী আবদুল মজিদের আদালতে এ চার্জশীট জমা দেন। দীর্ঘ তদন্ত করেন দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন। 

মামলার অপর আসামিরা হলেন- কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমেদ, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. জাফর আহম্মদ। আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির বেদারুল আলম। 

চার্জশীটে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জাফর আলমসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে মহেশখালীর এক ব্যক্তি। মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য অধিগ্রহণকৃত চিংড়ি জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের ২৩ কোটি টাকা প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলাটি করা হয়। 

মামলার পরপরই কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতায় এক নম্বর আসামি জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে বাদ দিয়ে দুই নম্বর আসামি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জাফর আলমকে এক নম্বর আসামি দেখানো হয়। আর ২৮ জন আসামির জায়গায় আরজিতে কাটাছেঁড়া করে ২৭ জন দেখিয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে মামলাটি তদন্তের জন্য পাঠান জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার।

এদিকে, দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে জব্দকৃত এন্ট্রি রেজিস্ট্রারে আসামি হিসেবে প্রথমে মো. রুহুল আমিন, জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার গং লেখা ছিল। পরবর্তীতে মো. রুহুল আমিন গং এর নামের উপর সাদা ফ্লুইড দিয়ে (একটু উপরে) মো. জাফর আলম গং লেখা হয়েছে। ওকালতনামায় অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী কর্তৃক স্বাক্ষরিত পাতায় মো. রুহুল আমিন, জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার গং-২৮ জন এর স্থলে ফ্লুইড দিয়ে ঘষামাজা করে মো. জাফর আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার গং-২৭ জন করা হয়েছে। 

পাশাপাশি মামলার বাদী এ.কে.এম কায়ছারুল ইসলাম চৌধুরী বনাম মো. রুহুল আমিন, জেলা প্রশাসক গং-বিবাদী এর জায়গায় মো. রুহুল আমিনের উপর কলম দিয়ে ঘষামাজা করে মো. জাফর আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গং-বিবাদী উল্লেখ করা হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলার বাদী কায়ছারুল ইসলাম চৌধুরীর বক্তব্য পুনরায় ২০০ ধারায় লিপিবদ্ধ করে নিজে ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর স্বাক্ষর করেছেন এবং বাদীর স্বাক্ষরের জায়গায় জালিয়াতির মাধ্যমে কায়ছারুল ইসলাম চৌধুরীর জাল স্বাক্ষর করা হয়। 

অভিযোগে বলা হয়েছে, মামলার আর্জির প্রথম তিন পাতায় বাদী কায়ছারুল ইসলাম চৌধুরীর নামে জাল স্বাক্ষর দেয়ার বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশারদ এর মতামতে প্রমাণিত হয়েছে। মামলার আরজির ৩টি পাতা পরিবর্তন ও অবশিষ্ট পাতায় কাটাছেঁড়া, ঘষামাজা করে দণ্ডবিধির ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ৪৭৭ ক, ১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় তারা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

আপন দেশ/প্রতিনিধি/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়