Apan Desh | আপন দেশ

স্ট্যান্ড রিলিজের পরও বহাল তবিয়তে পাবনা সমাজসেবা কর্মকর্তা

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ১৪ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ২০:০৬, ১৪ জুলাই ২০২৪

স্ট্যান্ড রিলিজের পরও বহাল তবিয়তে পাবনা সমাজসেবা কর্মকর্তা

ফাইল ছবি

স্ট্যান্ড রিলিজের পরও বহাল তবিয়তে পূর্বের কর্মস্থলেই অফিস করছেন পাবনা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. রাশেদুল কবীর। তবুও নিয়মিতভাবেই ব্যবহার করছেন সরকারি গাড়ি। নিচ্ছেন সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। এতে সেবাদানে স্থবিরতা নেমে এসেছে অফিসটিতে।

নথি বলছে, গত ২৯ এপ্রিল সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন দেয়। সে প্রজ্ঞাপনে রাশেদুল কবীরসহ অন্যান্য কার্যালয়ের মোট ১২ জন কর্মকর্তাকে বদলির আদেশ দেয়া হয়। এতে এ কর্মকর্তাকে পাবনার পার্শ্ববর্তী জেলা নাটোরের জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে বদলি করা হয়। নাটোরের উপপরিচালক মো.মোস্তাফিজুর রহমানকে পাবনায় বদলি করা হয়। 

এরপর ১৫ মে সমাজ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোস্তাফা মাহমুদ সরোয়ার স্বাক্ষরিত একটি পত্রে ওই মাসের ২১ তারিখের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়। এ পত্রে বলা হয়, নির্দেশ অমান্য করে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করা কর্মকর্তারা ২৩ মে অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) বলে গণ্য হবেন।

রোববার (১৪ জুলাই) পাবনা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে সরেজমিনে গিয়েও উপপরিচালক রাশেদুল কবীরকে পাওয়া যায়নি। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি এদিন অফিসে আসেননি। তবে তিনি নির্দেশ অমান্য করে এখনো পাবনাতেই নিয়মিত অফিস করছেন। অথচ সার্ভিস রুলের ৮১ ধারা অনুযায়ী, বদলি আদেশের পর নতুন কর্মস্থলে যোগদানের প্রস্তুতির জন্য একজন কর্মকর্তা সর্বোচ্চ ছয় দিন সময় পান। একই শহরে বদলি হলে প্রস্তুতির সময় পান না। 

দফতরের আদেশ অনুযায়ী ওই অফিসের সহকারী পরিচালক খন্দকার গোলাম সরওয়ারকে ভারপ্রাপ্ত করে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবার কথা থাকলেও তিনি তা করেননি। বদলিকৃত কর্মস্থলেও যোগদান করেননি। উলটো মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের বদলির নির্দেশের তোয়াক্কা না করে বহাল তবিয়তে বদলির আগের কর্মস্থলেই অফিস করছেন। 

জানা গেছে, গত বছরেও বদলির আদেশ হয় এ কর্মকর্তার। তদবির করে সে আদেশ বাতিল করান তিনি। 

ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার ক্ষেত্রে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক খন্দকার গোলাম সরওয়ার বলেন, আমি এখনো দায়িত্ব বুঝে পাইনি। স্যার (রাশেদুল কবীর) জানিয়েছেন ওই বদলির আদেশ নাকি সংশোধন হবে।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, অবমুক্ত হওয়ার পর পনেরো দিনের মত তিনি কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করেননি। এতে করে উপজেলা থেকে শুরু করে সমস্ত পর্যায়ের নানারকম বিল, ট্রেনিং ও টেন্ডার প্রক্রিয়া থেমে যায়। সার্বিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়। পরে এগুলো নিয়ে সমালোচনা উঠলে আবার নিয়মিতই সব ফাইলে স্বাক্ষর করছেন। আগের মত বহাল তবিয়তেই অফিস করছেন। 

অবমুক্ত হওয়ার পরও কীভাবে বহাল তবিয়তে অফিস করছেন তিনি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ছেলের এসএসসি পরীক্ষা বিবেচনায় বদলির আদেশের বিপরীতে মাত্র কয়েকটি মাস সময় চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। মন্ত্রণালয় থেকে মৌখিকভাবে তাকে অফিসের সকল কার্যক্রম পরিচালনার অনুমিত দিয়েছেন। মৌখিক অনুমতিতে এভাবে অফিস পরিচালনা করা যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটি মন্ত্রণালয়কে জিজ্ঞেস করতে হবে। আমি তাদের অনুমতিতেই অফিস করছি।

এব্যাপারে পাবনার জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান বলেন, নির্দেশ অমান্য করে অফিস করার সুযোগ নেই। স্ট্যান্ড রিলিজের বিষয়টি আমি জানি না, খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়