সুনামগঞ্জে বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা

উজান থেকে নেমে আসা ঢল আর অতিবৃষ্টির কারণে সুনামগঞ্জে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ জুন) বিকেল থেকে বৃষ্টি কম হওয়ায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী পাড়ের বসতঘর থেকে পানি নামলেও বাড়ছে হাওরের পানি।

বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে হাওর এলাকায়। তাই দুর্ভোগ আর দুর্দশায় আর হতাশায় দিন কাটছে সুনামগঞ্জের মানুষের। গত তিনদিন ধরে জেলার অন্তত ১৫ থেকে ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

সুনামগঞ্জ শহরের সুরমা নদীর পাড় থেকে পানি কিছু কমলেও এখন শহরের বড়পাড়া, তেঘরিয়া, হাজিপাড়া, নতুনপাড়া, বাঁধনপাড়া, হাছননগর, মল্লিকপুর, নবীনগর ও কালীপুর এলাকায় কোমর থেকে হাঁটু সমান পানি রয়েছে। এসব পানি স্থির হয়ে আছে, নড়াচড়া করছে না।

সুনামগঞ্জ পৌরশহরে গত তিন ধরে নতুন পাড়ায় শতশত মানুষ পানিবন্দি। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। কাজ নেই তাই অনেকের ঘরে খাবারও নেই। কেউ এসে দেখেও না মানুষ কতটা অসহায় হয়ে আছে।

ওই এলাকার পানি এখনও হাটু সমান আবার কোথাও কোমর সমান পানি রয়েছে। আতঙ্ক কাটছেই না। আবার বৃষ্টিও হচ্ছে। বৃষ্টি হলে পানি আরও বেড়ে যায়।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সুনামগঞ্জ শহরতলীতে ঈদের আগে থেকেই বন্যার পানি এসেছে। এলাকার লোকজন পাঁচ দিন ধরে বন্যার পানির নিচে তলিয়ে আছে, কেউ দেখে না। সব জায়গাতে পানি থাকায় ঘর থেকে বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না। ঘরে খাবার নেই, ওষুধ নেই। তাদের অসহায়ত্ব দেখার কেউ নেই। তাদের রুরি ভিত্তিতে ত্রাণ লাগবে, খাবার লাগবে। ক্ষুধার্ত বাচ্চাদের জন্য এক অসহনীয় দিন যাচ্ছে।

এদিকে এখনও সুনামগঞ্জের সঙ্গে ছাতক, তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার সব পর্যটন স্পট।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বানভাসি মানুষকে সহায়তা করতে ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মানুষ এসব কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারের দেওয়া ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি রান্না করা খাবারও দেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়নে ইউনিয়নে মেডিকেল দল গঠন করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাত দিয়ে জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় পানি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস থাকায় পানি আরও বাড়তে পারে।

আপন দেশ/এইউ