Apan Desh | আপন দেশ

সেন্টমার্টিনের ১০ হাজার মানুষ ‘বড় বিপদে’

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:০৭, ১১ জুন ২০২৪

সেন্টমার্টিনের ১০ হাজার মানুষ ‘বড় বিপদে’

ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তর সংঘাত চলমান। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে। এরইমধ্যে দেশটির সীমান্ত থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে চলাচল করা ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে বারবার ছোঁড়া হচ্ছে গুলি। মঙ্গলবারও (১১ জুন) সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফগামী ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণ হয়েছে।

গত শনিবার (৮ জুন) দুপুরে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে নাফ নদের বদরমোকাম মোহনায় একটি পণ্যবাহী ট্রলারে গুলির ঘটনা ঘটে। এতে কোনো হতাহত হয়নি। তবে ট্রলারের বিভিন্ন স্থানে সাতটি গুলি লেগেছে। 

সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, শনিবার দুপুরে পৌরসভার কায়ুকখালীয়া খাল থেকে পণ্যসামগ্রী নিয়ে এসবি রাফিয়া সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। চারজন মাঝি ছিলেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে ট্রলারটি টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথের বদরমোকাম এলাকায় পৌঁছায়। 

আরও পড়ুন>> কোকের বিজ্ঞাপন, ক্ষমা চাইলেন শিমুল

তিনি আরও বলেন, তখন মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে ট্রলারের দিকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়। এতে ট্রলারে থাকা অপর মাঝিমাল্লা শুয়ে পড়েন। এ সময় এসবি রাফিয়াকে লক্ষ্য করে ২০-৩০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়। পরে ট্রলারটির মাঝি মোহাম্মদ বেলাল ট্রলারটি ঘুরিয়ে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে এনে নোঙর করেছেন।

এর আগে, বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যার দিকে নাফ নদীর মোহনায় সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি চালানো হয়। এর আগেও ট্রলার লক্ষ্য করে বারবার গুলি ছুঁড়ে মিয়ানমারের ওপার থেকে।  

এসব গুলির ঘটনায় বেশ কিছু দিন ধরে এ নৌরুটে যাত্রী ও পণ্যবাহী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সেন্টমার্টিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ খাদ্য সংকটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুন>> সেন্টমার্টিনে নৌযান চলাচল বন্ধ, খাদ্য সংকটের আশঙ্কা

জানা যায়, সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। তাদের যোগাযোগসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম নৌযান। নৌযান বন্ধ থাকায় টেকনাফের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সেন্টমার্টিন। খাদ্য ও পণ্যবাহী বোট চলাচল না করায় সেন্টমার্টিনের দোকানগুলোতে মজুত খাদ্যপণ্য শেষ হতে চলেছে। সেই সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম দ্বিগুণ নিচ্ছেন। এ সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে সংকট তীব্র আকার ধারণ করবে।

সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, বোটে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখে ট্রলারচালক ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এতে নৌপথে ট্রলার নিয়ে যাতায়াত করতে কেউ রাজি হচ্ছে না। তাছাড়া ওই পথ ছাড়া সেন্টমার্টিনে আসার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা বা রুটও নেই। প্রতিদিন সেন্টমার্টিন-টেকনাফ নৌপথে ৬-৭টি বোটের মাধ্যমে শতাধিক মানুষ আসা-যাওয়া করে। পাশাপাশি খাদ্য ও নিত্যপণ্য বহন করা হতো। নৌযান বন্ধ থাকায় মানুষ খুব বিপদে আছে।

আরও পড়ুন>> আম্পায়ারের কারণেই হেরেছে বাংলাদেশ!

সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, এ দ্বীপে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দা। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ। ফলে খাদ্যপণ্যসহ কোনো মালামাল আনা যাচ্ছে না। অনেক দোকান খালি পড়ে আছে। এসব মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী একমাত্র জোগান টেকনাফ থেকে আসছে। 

গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমার থেকে এ নৌপথের ট্রলার লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যেই আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ নৌপথে ট্রলার চলাচল স্বাভাবিক করতে ওই এলাকায় কোস্ট গার্ড ও বিজিবির টহল জোরদার করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।

টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, গুলির ঘটনায় এ নৌপথে নৌযান বন্ধ রয়েছে। আপদকালীন রুট হিসেবে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমে জেটি ঘাটের প্রস্তাব দিয়েছি। এটি ব্যবহার করা গেলে সেখান থেকে নৌযান চলবে।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়