Apan Desh | আপন দেশ

আলীকদমে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

বান্দরবান প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:১২, ১ জুন ২০২৪

আলীকদমে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

ছবি: সংগৃহীত

  • সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয় হলেও পানি পায়নি আলীকদমবাসী
  • সুপেয় পানি না পেয়ে ঝিরি ও নদীর দূষিত পানি পান
  • সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে শোধনাগার প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি
  • পাহাড়ি পল্লিতেও পানির জন্য হাহাকার 

বান্দরবানের  সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বাধ্য হয়ে খাল, ঝিরি ও নদীর দূষিত পানি পান করছেন অনেকে। ফলে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

আলীকদম সদর ইউপির নারীরা প্রতিদিন খাওয়ার পানির জন্য নলকূপের সামনে কলসি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন। গ্রীষ্মে পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না তারা। শুষ্ক মৌসুমে পানি পাওয়া যায় এক থেকে দুই কলসি, অনেক সময় তা-ও পাওয়া যায় না। 

উপজেলার ৩ নম্বর নয়াপাড়া ও ৪ নম্বর কুরুকপাতা ইউপির পাহাড়ি পল্লিতেও পানির জন্য হাহাকার চলছে। আলীকদমের সদর ইউপির ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড ও ৩ নম্বর নয়াপাড়া ইউপির ৩, ৪, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে খাওয়ার ও ব্যবহারের পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। খাওয়ার পানির সংকট মেটাতে নদীর পানি পান করছে অনেকে।

আরও পড়ুন>> ভারতের পানিতে ডুবেছে সিলেট, বন্দি সাড়ে ৬ লাখ মানুষ

মংশিপুপাড়ার এক বাসিন্দা জানান, পাড়ায় একটি নলকূপ আছে। তবে নষ্ট হয়ে গেছে গত বছর। পানির তৃষ্ণা মেটাতে নদী থেকে পানি নিয়ে যান তারা।

৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুই নারী জানান, পুরো এলাকায় কয়েকটি নলকূপ থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে কেবল একটি নলকূপে পানি পাওয়া যায়। তাদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও জনপ্রতিনিধিদের তদবির না থাকার কারণে পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। পানির এ সংকট মেটাতে বিভিন্ন স্থান থেকে পানি সংগ্রহ করে ঘোলা পানি খাচ্ছি। 

আরও পড়ুন>> ১২ মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড ২০ গ্রাম, নিহত ৩

স্থানীয়রা জানান, এলজিইডি ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের দেয়া রিং ওয়েল, নলকূপগুলো অল্প গভীরতায় স্থাপন করা হয় বর্ষা মৌসুমে, যার কারণে শুষ্ক মৌসুম এলে পানি ঠিকমতো পাওয়া যায় না। সদর ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের যে একটি নলকূপের পানি পাওয়া যায়, সেটি ৩০ বছরের পুরোনো।

কুরুকপাতা ইউপির এক বাসিন্দা জানান, আমরা সরাসরি ঝিরির পানি ব্যবহার করে আসছি, করার কিছুই নেই। 

জানা যায়, আলীকদমে পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ২০১১ সালের ১১ জুন শুরু হলে তখন ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি জলাধার নির্মাণের পর প্রকল্পের কাজ পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পরিত্যক্ত শোধনাগারটি পুনরায় নির্মাণের জন্য ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশন থেকে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০২২ সালের জুনে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু গত বছরের ১২ এপ্রিল উদ্বোধনের দিনই পানি সরবরাহের পর বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্পের শুরু থেকে দুই দফায় এ পর্যন্ত সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয় হলেও পানি পায়নি আলীকদমবাসী। 

সদর ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন বলেন, চেষ্টা করছি ৪ নম্বর ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পানির সংকট মেটাতে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। 

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের আলীকদম উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হালিম বলেন, ঘণ্টাখানেক পরে যোগাযোগ করেন। পরে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়