Apan Desh | আপন দেশ

ইউক্রেন-রাশিয়ার আঙুর চাষ করছেন রায়হান

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:২৭, ১৮ মে ২০২৪

আপডেট: ১১:২৯, ১৮ মে ২০২৪

ইউক্রেন-রাশিয়ার আঙুর চাষ করছেন রায়হান

ছবি : সংগৃহীত

দেশে বিদেশি ফলের চাষ দিন দিন বাড়ছে। সে তালিকায় নাম লিখিয়েছে আঙুরও। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেশে চাষ হওয়া আঙুরের স্বাদ ও বৈশিষ্ট্য খুব উন্নতমানের নয়। তবে কৃষিবিদরা বলছেন, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় কিছু দেশে ভালো আঙুর চাষ হয় বলে বাংলাদেশেও সঠিকভাবে সঠিক জাতের চাষ করা গেলে এর মানোন্নয়ন সম্ভব হতে পারে।

দেশে যারা কিছুটা বড় পরিসরে আঙুর চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের মধ্যে একজন হলেন কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের তরুণ উদ্যোক্তা আবু রায়হান ফারুক। উত্তর সীমান্তের এ জেলায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার নানা জাতের আঙুর চাষ করছেন তিনি। সব মিলিয়ে তার দ্রাক্ষাকুঞ্জে ফলছে প্রায় ১০০ জাতের আঙুর। ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে আঙুরের কাটিং এনে থাকেন ফারুক।

নিজের বাড়ির পেছনে প্রায় ২৩ বিঘা জমিতে বিশাল ফলের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি। এর মধ্যে দুই বিঘা জমিতে চাষ করেছেন আঙুর। উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক ফারুক জানালেন, তার আঙুর বাগানে চাষ হওয়া আঙুরের জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে রেডরোজ, হ্যালোইন, বৈকানুর, গ্রিন লং, আইসবার্গ, সুপারনোভা ইত্যাদি। ফারুকের সমন্বিত উদ্যোগটিতে রয়েছে সাধারণ মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থাও।

এ কারণে এর নাম দিয়েছেন কাজী অ্যাগ্রো ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ফুড পার্ক। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ফারুকের বাগানের চারদিকে নিরাপত্তাবেষ্টনী। দূর থেকে বোঝার উপায় নেই ভেতরে কী রয়েছে। প্রবেশ করলে শুরুতেই চোখে পড়ে উন্নত জাতের মাল্টার বাগান। কিছুদূর এগিয়ে যেতেই দেখা যায় বাগানে লতায় লতায় ঝুলছে বাহারি রঙের আঙুরের থোকা।

আরও পড়ুন <> দিনাজপুরের লিচু বাজারে আসবে সপ্তাহ পর

দুই পাশের উঁচু বেডের মাঝখান দিয়ে পানি দেয়ার নালায় আগাছা পরিষ্কার করছেন এক দিনমজুর। আরও কিছুদূর এগোতে চোখে পড়ে হরেক জাতের হরেক চেহারার আম। জাপানের বিখ্যাত বহুমূল্য ‘সূর্য ডিম’ আমেরও দেখা মিলল এখানে।

ফারুক মূলত পরীক্ষামূলকভাবে এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে ২০২২ সালে আঙুরের চাষ শুরু করেন। পরে ফলন ভালো হওয়ায় চাষ চালিয়ে যান। মাল্টা ও বিদেশি জাতের আমগাছগুলো রোপণের দুই বছরের মাথায় ফলন দেয়া শুরু করেছে। মোটামুটি ভালো অঙ্কের বিনিয়োগের পর এখন কিছু লাভের মুখ দেখছেন ফারুক। এ বছর আঙুরের ৪০টিরও বেশি জাত থেকে ফলন পেয়েছেন তিনি। ফারুক দাবি করলেন, রং, স্বাদসহ মানে এগুলো আমদানি করা আঙুরের সঙ্গে তুলনীয়। তিনি বলেন, সরকারি সহায়তা পেলে দেশে আঙুরের চাষ অনেক এগিয়ে নেয়া যাবে। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ফলের চাহিদাও মিটবে। বাঁচবে আমদানিতে ব্যয় হওয়া বৈদেশিক মুদ্রা।

ফারুকের বাগান দেখতে প্রায় প্রতিদিনই বেড়াতে আসে অনেক দর্শনার্থী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, খামারবাড়ি কুড়িগ্রামের উপপরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বললেন, ‘ফারুক একজন তরুণ উদ্যোক্তা। তিনি আঙুরের পাশাপাশি মাল্টা ও আমের চাষ করছেন। কুড়িগ্রামের মাটি ও জলবায়ুতে আঙুরের ফলন কেমন হয় তা বুঝতে আমরাও ফারুকের আঙুর বাগানের খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি ভালো ফলাফল পাওয়া যায় তাহলে আমরা কুড়িগ্রামে এটি সম্প্রসারণের ব্যবস্থা করব। এ জন্য তাকেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হবে।’

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়